দিনের পর দিন গ্যাসের ওষুধ খেয়ে এই ক্ষতিগুলো ডেকে আনছেন না তো
বুক জ্বালাপোড়া, পেট ফাঁপা, অরুচি, বদহজম, বুকে বা পেটে ব্যথার মতো সমস্যার সমাধানে আমরা চট করে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে ফেলি। আবার যাঁরা দীর্ঘস্থায়ী অসুখে ভোগেন, তাঁদেরও ধারণা, যেকোনো ওষুধের সঙ্গে গ্যাসের ওষুধও খেতে হবে। কেউ কেউ এভাবে মাসের পর মাস টানা গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে যান। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, দীর্ঘদিন বা টানা গ্যাসের ওষুধ খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
১. ভিটামিনসহ বিভিন্ন খনিজ লবণের ঘাটতি: কিছু ভিটামিন ও খনিজ লবণ (যেমন ভিটামিন বি১২, ফলিক অ্যাসিড, আয়রন) বিপাক প্রক্রিয়ার জন্য অ্যাসিডের দরকার হয়। দীর্ঘদিন গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার ফলে পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যাসিড পাকস্থলীতে তৈরি হয় না, ফলে ভিটামিনসহ এসব খনিজ লবণের ঘাটতি দেখা দেয়।
২. হাড়ক্ষয় রোগ: হাড় তৈরি হওয়ার অন্যতম উপাদান হলো ক্যালসিয়াম। আর ক্যালসিয়াম বিপাকের জন্য দরকার অ্যাসিড। ক্রমাগত গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার ফলে শরীরে অ্যাসিডের ঘাটতি হয় এবং ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত হাড়ক্ষয় রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
৩. পাকস্থলীর ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বাড়ে: গ্যাসের ওষুধ খাওয়ায় পাকস্থলীর গ্রন্থি থেকে গ্যাস্ট্রিন নামক হরমোন তৈরির প্রবণতা বেড়ে যায়, যা পাকস্থলীর ক্যানসার হওয়ার অন্যতম কারণ।
৪. সংক্রামক রোগ: বিভিন্ন ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া বা জীবাণুকে পাকস্থলীর অ্যাসিড ধ্বংস করে। কিন্তু গ্যাসের ওষুধ খাওয়ায় এই ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়াগুলো শক্তিশালী হয়ে উঠে সংক্রামক রোগ তৈরি করে।
৫. কিডনি রোগ: বিভিন্ন গবেষণা দেখা গেছে, সারা বছর গ্যাসের ওষুধ খাওয়ায় কিডনির কার্যকারিতা কমে যাওয়ার প্রবণতা অনেক গুণ বেড়ে যায়।
৬. অম্লত্ব বৃদ্ধি: দীর্ঘদিন গ্যাসের ওষুধ খাওয়ার কারণে কিছু কিছু হরমোনের প্রভাবে অ্যাসিড তৈরি হওয়া এতটাই বেড়ে যায়, যে বুকে জ্বালাপোড়ার মতো প্রদাহের পর কোনো গ্যাসের ওষুধ দিয়ে প্রশমিত করা সম্ভব হয় না।
তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দিনের পর দিন গ্যাসের ওষুধ খাওয়া ঠিক নয়।
Was this post helpful?0
0